• রাত ১১:০৯ মিনিট রবিবার
  • ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • ঋতু : গ্রীষ্মকাল
  • ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
এই মাত্র পাওয়া খবর :
নারায়ণগঞ্জ পল­ী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি পালন সোনারগাঁয়ে তিনদিন ব্যাপী ফায়ার সার্ভিসেরর স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষন সোনারগাঁয়ে আস্থা ফিডে সেনা প্রধান সোনারগাঁয়ে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিক বরাদ্দ সোনারগাঁও পৌরসভায় কালামের কেন্দ্র কমিটির সভা সোনারগাঁয়ে বিশ বছর পর বাকপ্রতিবন্ধী ভাইকে ফিরে পেলেন তার বড় ভাই মাহফুজুর রহমান কালামকে বিজয়ী করেতে জামপুরে আলোচনা সভা সোনারগাঁয়ে প্রার্থীতা ফিরে পেলেন ৫ প্রার্থী সোনারগাঁয়ে ভবন ঘেঁষে মাটি খনন, ভেঙ্গে পড়লো পাশের স্থাপনা কালাম একমাত্র যোগ্য প্রার্থী, উপজেলা নির্বাচনে তাকে ভোট দিন: ডা. বিরু সোনারগাঁয়ে সার্বজনীন পেনশন মেলা ও স্পট রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম উদ্ধোধন বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বউয়ের মামলা সোনারগাঁয়ে ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ৯ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ, ৪ জন বাতিল সোনারগাঁয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যুবককে অপহরন করে নির্যাতনের অভিযোগ সানাউল্লাহকে ডাকাত আখ্যা দিয়ে হত্যা চেষ্টা ও ১৫ মামলার আসামী গ্রেপ্তার বন্দরে ইউএনও অফিসের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যের আত্মহত্যা সোনারগাঁয়ে ২দিন ধরে মাদ্রাসা ছাত্র নিখোঁজ সোনারগাঁয়ে দুই ব্যাক্তি আটক, ৪৯ লাখ জাল টাকা উদ্ধার অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন আজিজুল ইসলাম মুকুল সোনারগাঁয়ে ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ১৪ জনের মনোনয়নপত্র দাখিল

ওরাও অসুর

Logo


দেবকীর বাড়ির দুর্গাপুজো। বর্ধমান জেলার নূতনহাট গ্রামে ওদের অনেক পুরানো জমিদার বাড়ি। বাড়ির অন্যান্য অংশ ভেঙেচুরে গেলেও প্রধান বাড়িটা নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যথেষ্ট ভালো অবস্থায় রয়েছে। পুজোর আমেজে চারিদিক একদম ঝলমল করছে ।
ওদের বাড়িটা এত সুন্দর করে সাজানো হয়েছে, দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। প্রতি দরজায় হরেক রকমের বাহারি ফুলের মালা, কাগজের কারুকার্য, আম্রপল্লব পুরো বাড়িটাকে একদম নতুন করে তুলেছে। যেটুকু অপূর্ণতা ছিল, পুরোটাই আঁচলে আড়াল করে নিয়েছে আগমনীর চোখধাঁধানো সৌন্দর্য। এত সব সৌন্দর্যের মধ্যে মায়ের মুখটা ভীষণ উদাসীন, একটা বুকে জমা কষ্ট যেন আলোকবৃত্তের মত অধিকার করে আছে মায়ের পুরো মুখটাকে। চোখটাও ছলছল করছে যেন। বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের কথা বলতে পারবো না, তবে ঠাকুরদালানে বসে বসে দেবকী আমায় এই কথাই বললো।
এই দ্যাখো, কথায় কথায় নিজের পরিচয় দিতেই ভুলে গিয়েছি। আমি অনি, ভালো নাম না হয় পরেই জানবেন। দেবকী আমার স্কুলের বন্ধু,আর বরাবরই আমার খুব প্রিয়। আমি এখন কলকাতায় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি, আর দেবকী বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের ছাত্রী। ও আমার থেকে অনেকটা আলাদা হলেও আমি ওকে অনেক বেশিই ভালোবাসি।
উচ্চমাধ্যমিক দেবার পর দেবকীকে আমার মনের কথা বলায় ও বেশ গম্ভীর হয়ে গেল সেবার। আমার সাথে দু’দিন কথা বললো না একদম। দুদিন পর, ও আমায় ফোন করে বলল,” একবার আমাদের বাড়িতে আসিস বিকালে, সত্যনারায়ণ এর পুজো আছে। তাই মা তোকে বলতে বলল আসতে। চলে আসিস। রাখলাম।”
এই বলে ফোন টা রেখে দিলো।
বিকেলে যথারীতি গেলাম ওদের বাড়ি। ওর কথা অমান্যি করার সাধ্য আমার ছিল না। পুজোর ঘরে ওদের বাড়ির সবাই ছিল। আমায় দেখে কাকিমনি ইশারায় একটা জায়গায় বসে থাকতে বললেন। পুজোর ঘরে দেবকীর বাবা, মেজোকাকা, মেজোকাকিমা, ছোটকাকিমা আর পাড়ার কিছু লোকজন ছিল। ছোট খাটো কিছু থাকলেই পাড়ার অনেক মানুষ জমিদারবাড়িতে এসে জড়ো হতো। অবশ্য দেবকীর বাবা আর মেজকাকা পাড়ার সকলকে আসতে বলতেন। শুধু ওর ছোটকাকা একটু অন্যরকম ছিল। পুজো পার্বনে প্রায়ই আসত না। তবে ছোটো কাকা না এলেও ছোট কাকিমা কে পাঠিয়ে দিতেন।
ওই ছোট কাকিমা আবার সব পুজোর মধ্যমণি হয়ে থাকত। এককথায় ছোটো কাকিমা ছাড়া জমিদার বাড়ির পুজো একদমই অসম্পূর্ণ ছিলো।
যাই হোক। কিছুক্ষন বসে থাকার পর বাইরে বেরিয়ে আসতেই দেবকী কে দেখলাম। আমার মাথা টা নিচু হয়ে গেলো আপনা আপনিই। আমি যেন ওর দিকে চোখ তুলে কথা বলতে পারছিলাম না। দেবকী বলল,” একবার উপরের ঘরে আসিস তো। তোর কয়েকটা জিনিস আছে নিয়ে যাস।”
এবার আমি একটু ঘাবড়ে গেলাম। দেবকী হয়তো আমার ওইদিনের ব্যবহার এর পর একদমই পছন্দ করেছে না। মনটা বড়ই খারাপ হয়ে গেল। দেবকী কে আমি সত্যিই বড় ভালোবাসতাম।
পুজো শেষ হলে একটা শালপাতায় প্রসাদ নিয়ে দেবকীর ঘরে এলাম। ও চুপ করে জানলা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে ছিল।
আমি ওকে বললাম,” বল কেন ডাকছিলি?”
” দরজাটা বন্ধ করে দে তো। পাশের বাড়ির বিড়ালটা বার বার ঢুকে পড়ছে ঘরের ভিতর।”
দরজাটা বন্ধ করে আসতেই জানলার বাইরের দিকে তাকিয়েই জিজ্ঞেস করলো,” তুই সত্যিই আমায় ভালোবাসিস?”
আমি মুখটা নামিয়ে আমতা আমতা করে হ্যাঁ বললাম।
ও এবার জানলার দিক থেকে ফিরে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,” সত্যি বলছিস তুই?”
আমি মুখ নিচু করে চুপ করে রইলাম।
ও‌ আমার সামনে এগিয়ে এলো। আমার ‌নিশ্বাস প্রশ্বাস, চোখের দৃষ্টি সবকিছুই যেন নিজের ‌আয়ত্তের বাইরে, ছোটবেলার বন্ধুর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারছি না।
ও কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে রইল। তারপর বুকের আঁচলটা সরিয়ে ফেলে দিল মাটিতে, আর হাতে করে আমার মুখটা ওর চোখের দিকে তুলে ধরলো। এই প্রথম ওকে এইভাবে দেখলাম। ওর শরীরের উষ্ণতা যেন আমায় আস্তে আস্তে অন্য এক অজানা জগতে নিয়ে চলে যাচ্ছিল। শুধু ‌একটা হাতের স্পর্শে, তাও যে হাত আমার বাল্য পরিচিত, তার স্পর্শে আমার শরীরে অসম্ভব রকমের শিহরণ হতে পারে, আমার হাত পা ঘামে ভিজে যেতে পারে, তা আমি কল্পনাতেও আনতে পারিনি।
দেবকীর গলা শুনে ঘোর কাটল। ও বলল,” এরকম নার্ভাস ছেলে আমায় ভালোবাসবে কীভাবে? তুই যা ঘামছিস।”
বলে হাসতে শুরু করলো।
আমি এখন একটু একটু স্বাভাবিক হতে পেরেছি। তবে এখনও কথা বের হচ্ছে না গলা থেকে।
কিছুক্ষণ পর দেবকী বলল,” আমার বুকে হাত দেবার চেষ্টা করবি না খবরদার। এখন আঁচলটা যদি গুছিয়ে দিতে পারিস তবেই আমি তোর হতে পারি।”
আমি আঁচলটা গুছিয়ে দেবার চেষ্টা করতে লাগলাম। ওর মুখটা আমার ঘাড়ের উপর। ওর নিঃশ্বাসের স্পর্শে এখনও শিহরিত হয়ে উঠছিলাম।
আমার কাজের ঘটা দেখে ও হেসে বলল,” ছাড়, তোকে আর আঁচল গুছিয়ে দিতে হবে না।”
বলেই আমার হাতটা টেনে বুকে জড়িয়ে নিল।
ওর বুকের স্পর্শ আমি পেয়েছিলাম, আর কেন জানি মনে হয়েছিল, ওর স্পর্শে আমার জীবন ছিল।
ও সেদিন আমায় আগলে রেখেছিল, ওর মনের একদম কাছে, ওর বুকের স্পর্শে।
এরপর আমরা অনেকটা কাছে চলে এলাম। পড়াশোনার সূত্রে দূরে থাকলেও দুজনে দুজনের গলার শব্দ না শুনলে সারাটা দিন বেশ অস্বস্তি বোধ হতো। এটাই হয়তো ছিল আমাদের ভালোবাসার প্রথম অধ্যায়।

দুর্গাপুজোয় বেশ কিছুদিন ছুটি পেলাম।
চতুর্থীর বিকেলে বাড়ি ফিরে, আজ, অর্থাৎ পঞ্চমীর সকালেই দেবকীদের বাড়ি এসেছি।
ওদের বাড়ি ঢুকতেই কাকিমনি অর্থাৎ দেবকীর মায়ের সাথে দেখা। কাকিমনি আমায় দেখতে পেয়েই হাতের থালা থেকে একটা সন্দেশ আমার মুখে ভরে একগাল হেসে জিজ্ঞেস করলে,” হ্যাঁরে অনি, বাড়ি কবে ফিরলি? আর তোর মা বাবা কেমন আছে?”
মুখে সন্দেশ পুরে দেওয়া আমি, কাকিমনির কথার উত্তর দিতে গিয়ে মারাত্মক ভাবে বিষম খেলাম। সে কেশে, হেঁচে জঘন্য ব্যাপার একদম। কাকিমনি তো ছুটে গিয়ে জল নিয়ে এলেন, আর মাথায় হাওয়া করতে থাকলেন। উনি বললেন,” তুই একটু বোস এখানে, আমি কটা কাজ সেরে আসি।”
কাকিমনি ওখান থেকে চলে যাওয়ার পর আমি দোতলায় দেবকীর ঘরে এলাম। ওখানে ওকে দেখতে পেলাম না। ওকে দেখতে না পেয়ে গেলাম ছাদের ওই কোনটায়, যেখানে আমরা ছেলেবেলায় বসে বসে অনেক সময় কাটাতাম। দেখি, দেবকী একা বসে আছে দেওয়ালে হেলান দিয়ে। আমার উপস্থিতি ও টের পায়নি। পা টিপে টিপে গিয়ে সামনে থেকে জড়িয়ে ধরলাম ওকে। ও কেমন আঁতকে উঠলো যেন। আমায় এক ঝটকায় আমাকে সরিয়ে দিয়ে বুকের ওড়নাটা ঠিক করতে করতে বলল, ” তুই কখন এলি? ”
বলেই মুখে একটা কৃত্রিম হাসি আনার চেষ্টা করলো। আমি বুঝতে পেরে ওর হাত টা ধরে চুপ করে বসে রইলাম। ওকে আর বেশি বিরক্ত করলাম না। যদি কিছু বলার হয় ও নিজেই বলবে নাহলে বলবে না।
আমাদের সম্পর্কটা শুরু হবার পর সেই ছোট্ট দেবকী হঠাৎ করে যেন অনেকটা বড়ো হয়ে গিয়েছিল। সময়ের সাথে সাথে ওর অভিমানগুলোও ওর সৌন্দর্যের সাথে তাল মিলিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠতে শুরু করেছিল।
এখন‌ বেশ বুঝতে পারি ওই দু দিন ও এটাই ভেবেছে যে ওর অনি ওকে ভালো রাখতে পারবে বা ও নিজে ওর অনিকে যত্ন করে রাখতে পারবে কিনা।
দেবকী এবার উঠে পড়লো ওখান থেকে। আমার ডান হাতটা ওর মুঠোর মধ্যে ধরে বলল,” হ্যাঁরে অনি, তুই আমায় কতটা ভালোবাসিস?”
আমি আর কিছু বললাম না, আমার বাঁ হাতটা ওর হাতের উপর রেখে শক্ত করে দুহাতে চেপে ধরে রইলাম। বেশ বুঝতে পারলাম ওর চোখটা ছলছল করছে।
কিছুক্ষণ এভাবে থাকার পর দেবকী বলল,” চল, মন্দিরের সিঁড়ি তে গিয়ে বসি। এখানে ভালো লাগছে না আর।”
সেই থেকেই এই সিঁড়ি তে বসে গল্প করছি। দেবকীর বাড়ির সবাই বেশ ব্যস্ত। আমি যতই ওকে হাসানোর চেষ্টা করি ও একটু হেসে আবার গম্ভীর হয়ে যায়। কিছু একটা হয়েছে যেটা ও আমায় বলতে পারছে না হয়তো। আমি মনে মনে নিজেকে সান্ত্বনা দিলাম।
এই সময়ে কাকিমনি ডেকে বললেন,” তোরা খাবার টা খেয়ে নে। ঠান্ডা হয়ে যাবে।”
দেবকী আর আমি গিয়ে গরম গরম লুচি আর আলুর দম খেয়ে নিলাম।
এরপর দুজনেই পুজোর সবকিছু নিয়ে মেতে উঠতে আস্তে আস্তে দেবকী অনেক টাই স্বাভাবিক হয় এলো। ওর চোখের ভাষা, ঠোঁটের মৃদু জড়তা, আমায় আবার সেই ছেলেবেলার স্মৃতিগুলো বার বার মনে করিয়ে দিতে থাকলো।
পুজোর কটা দিন আমি দিনের প্রায় বেশিরভাগ সময়টাই ওদের বাড়িতেই থাকি।রাতে শুধু বাড়িতে শুতে আসি।
মা মজা করে বলে,” দেখিস অনি, ঘরজামাই হয়ে যাস না যেন।”
আমি মাকে বলি,” মা তুমিও পারো বটে।”
মা হেসে নিজের কাজে চলে যায়।
সপ্তমী, অষ্টমী,নবমী দেদার মজা করে কাটল। দেবকীদের অনেক আত্মীয় এই পুজোয় আসেন বলে পুজোয় খুব হইহুল্লোড় হয়। আর সকলের মধ্যমণি তো ছোটকাকিমা। সে সারা দিন শুধু লোকের নকল করছে, আর বাড়িসুদ্ধু লোক তার রকম দেখে হেসে কুটোপুটি।
দশমীর দিনে মেয়েদের সিঁদুর খেলার সময় কাকিমনি আমাকেও জোর করে গোটা গালে সিঁদুর মাখিয়ে দিলে। আমি ভিড়ের মাঝে দেবকীকে খুঁজতে গিয়ে দেখি ও এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে, আর ওর গোটা গালে সিঁদুর তার নিজের ইচ্ছেমত শয্যা প্রস্তুত করে বসে আছে। আমি ওর কাছে এগিয়ে এসে ওকে বুকের কাছে টেনে নিয়ে ওর ঠোঁটে আমার ঠোঁট ডুবিয়ে দিলাম। ও কোন কথা বলল না। চুপ করে রইল। তারপর আস্তে করে আমায় সরিয়ে দিয়ে বললো,” অসভ্য একটা। তর আর সইছে না বাবুর।”
তারপরে একটু হাঁফ নিয়ে বলল,” দাঁড়া অনি, আমি শাড়ি টা বদলে আসছি। এইটায় বড্ড গরম করছে।”
আমি হাসিমুখে বললাম,” ওইটা কিন্তু অর্ধেকটাই হলো। এসে পুরোটা দিস।”
ও হেসে চলে গেল।
দোতলার এক কোণে দেবকীর ঘর। পুজোর জন্য গোটা বাড়ি জুড়ে অনেক আলো দেওয়া হয়েছিল, তাই বাড়ির কোথাও অন্ধকার থাকার কথা নয়। ও তাড়াতাড়ি করে দোতলায় উঠে গেল। দেখল, ওর ঘরের দিকটা বেশ অন্ধকার। মনে হয় ওদিকের ল্যাম্প টা কোন কারণবশত খারাপ হয়ে গিয়েছে। যাই হোক, ও হাতড়ে হাতড়ে ওদিকে যেতে থাকলো। নিজের বাড়ি অন্ধকারে চেনায় কোন অসুবিধা হয় না। দেবকীর ও হয়নি। ঘরের মধ্যে ঢুকে ও আর আলো জ্বালালো না, কারন বাইরের জোরালো আলোর আভায় ঘরের ভিতরটা মোটামুটি দেখা যায়।
আলনা থেকে একটা সুতির শাড়ি নিয়ে বিছানায় রাখলো ও। তাড়াহুড়ো করে পড়ে থাকা শাড়িটা খুলে ফেলল। বুকে হাত দিয়ে দেখলো কামিজটা একদম ঘামে ভিজে গিয়েছে। কামিজের হুক গুলো আলগা করে একটা ওড়না দিয়ে বুকটা যত্ন করে মুছে নিল।
এমন সময় হঠাৎই ওর মুখটা কেউ পিছন থেকে চেপে ধরে কামিজটা খুলে ছুঁড়ে ফেলে দিলো। মানুষটা ওকে জোর করে বিছানায় ফেলে দিল। ও এতটাই ভয় পেয়ে গেল যে মুখ দিয়ে কোন আওয়াজ ও করার সামর্থ্য নেই ওর।
ওই আবছা আলোয় ওই মানুষটাকে স্পষ্ট চিনলো ও।
ওর ছোটকাকিমা।
ছোটকাকিমা ওর মুখ থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে বলল,” অনেক দিন থেকে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিস আমার থেকে। তুই কী জানিস না যে আমি তোর এই শরীরটাকে কতটা ভালোবাসি? তোর ওই স্তনবৃন্তে মুখ না দিলে রাতে আমার ঘুম আসে না । তোর যোনির সমস্ত রস শুষে নিলে আমার বড় তৃপ্তি হয়।
আমার এইটুকু চাহিদা মেটাতে পারিস না তুই?”
দেবকী ভয়ে কুঁকড়ে গেছে যেন।
কোনরকমে জড়িয়ে জড়িয়ে বলল,” আমি এসব পারব না কাকিমা। আমার বড্ড ঘেন্না করে।”
ছোটকাকিমা আর কথা না বলে দেবকীর স্তনবৃন্তে মুখ গুঁজে দিলে, বুভুক্ষু মানুষের মতো সমস্ত রস শুষে নিতে চাইলো।
দেবকী তার দুই হাত দিয়ে এলোপাথাড়ি ভাবে কাকিমার পিঠে মারতে থাকলো। তবে ওর কাকিমার কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। যেন ১০ দিনের বুভুক্ষু মানুষের সামনে খাবার ভর্তি পাত্র রাখা হয়েছে। কাকিমার শরীরটা দেবকীকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে।
শরীরের সমস্ত শক্তি একত্র করে ওই বন্ধন ছিন্ন করার চেষ্টা করলো ও। প্রথমবার, দ্বিতীয়বার হেরে গেল ও।
তৃতীয় বারের বার সজোরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল কাকিমাকে। কাকিমা গিয়ে পড়ল বিছানার অন্যধারে। দেবকী চড়ে বসল ওঁর গায়ের উপরে। সমগ্র শক্তি দিয়ে কাকিমার কামিজটা ছিঁড়ে ফেলে ডান স্তনবৃন্তে সজোরে কামড় বসিয়ে দিল দেবকী। যন্ত্রণায় কঁকিয়ে উঠলেন উনি। এরপর তিনি দেবকীর দিকে হাত বাড়াতেই ,চুলের কাঁটা খুলে নিয়ে কাকিমার গলায় সজোরে বসিয়ে দিলো দেবকী। কিছুক্ষন পর পর কাকিমার শরীর টা কেঁপে কেঁপে উঠে একদম স্থির হয় গেল।বিছানা ভিজে গেলো রক্তে। দেবকীর দুহাতে রক্ত।
ইতিমধ্যে দেবকীকে খুঁজতে খুঁজতে আমি এসে পড়েছি ওর ঘরে। আমায় দেখে দৌড়ে এলো ও। আমার বুকে নিজেকে লুকিয়ে নিল ও। ওর নগ্ন বুক আমার পাঞ্জাবির আভরণ খুঁজে নিয়েছে মুহূর্তের মধ্যে। আমার বুঝতে অসুবিধা রইল না কিছুই।
দেবকী কান্নাভেজা গলায় বলল,” সব সময় পুরুষের মাঝে অসুর থাকে না অনি, কিছু কিছু দুর্গার নোংরা মনেও অসুর জন্ম নেয়। আজ ওইরকম এক অসুরকে শেষ করেছি আমি।”
বলেই মুখ লুকিয়ে অঝোরে কেঁদে চলল আমার বুকে।
একদিকে বিছানায় কাকিমার অর্ধনগ্ন লাশ, অন্যদিকে অসুর নাশকারিনী আমার দেবী, আমার দেবকী।
জানলা দিয়ে বিসর্জনের বাজনা শোনা যাচ্ছে, আর আমার দেবীর চিৎকার করে কান্না আমার শরীরের প্রতিটি স্নায়ুকে এক আশ্চর্য তৃপ্ততা এনে দিচ্ছে।
আমি আমার ঠোঁটটা ডুবিয়ে দিলাম ওর ঠোঁটে।।
————————— অনিবেন্দ্র


Logo

Website Design & Developed By MD Fahim Haque - Web Solution